প্রস্বেদনের গুরুত্ব

জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র - প্রস্বেদনের গুরুত্ব

উদ্ভিদের জীবনে প্রস্বেদনের গুরুত্বঃ

প্রস্বেদন উদ্ভিদের এক স্বাভাবিক জীবন রক্ষাকারী জৈবনিক ও শারীরবৃত্তিক প্রক্রিয়া। এর ফলে একদিকে উদ্ভিদ যেমন উপকৃত হয় অন্যদিকে এর কিছু অপকারী ভূমিকাও রয়েছে।

উপকারী ভূমিকাঃ

১. পানি শোষণ : পাতায় প্রস্বেদনের ফলে জাইলেম বাহিকায় পানির যে টান পড়ে তা মূলরোম কর্তৃক পানি শোষণে সাহায্য করে।

২. রসের ঊর্ধ্বস্রোত : প্রস্বেদনের ফলে যে ব্যাপন চাপ ঘাটতি (DPD)-র সৃষ্টি হয় তা সরাসরি পানি বা রসকে জাইলেম বাহিকার মাধ্যমে পাতায় পৌঁছাতে সাহায্য করে অর্থাৎ রসের উর্ধ্বস্রোতে সাহায্য করে ।

৩. পাতায় অবিরাম পানি সরবরাহ : খাদ্য উৎপাদনের জন্য পাতায় অবিরাম পানি সরবরাহ ঘটায়।

৪. অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন : মূল দিয়ে শোষিত অতিরিক্ত পানি প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় নিষ্কাশিত হয় ।

৫. দৈহিক বৃদ্ধি : স্বাভাবিক প্রস্বেদন উদ্ভিদদেহের বৃদ্ধির সহায়ক 

৬. পানি সংবহন : প্রস্বেদনের ফলে যে ব্যাপন চাপ ঘাটতির সৃষ্টি হয় তা পূরণে পানি শোষিত হলে উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশে পানি সংবহিত হয়।

৭. উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ : প্রস্বেদন প্রক্রিয়া উষ্ণপ্ৰধান অঞ্চলের উদ্ভিদকে শীতল রাখে এবং সূর্যালোকে কার্যরত পাতাকে শুকিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে । 

৮. সালোকসংশ্লেষণ ও শ্বসন : প্রস্বেদনের মাধ্যমে পত্ররন্ধ্রের যে হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে তা সালোকসংশ্লেষণ ও শ্বসনকে প্রভাবিত করে।

৯. খাদ্য পরিবহন : প্রস্বেদনের ফলে উদ্ভিদদেহের বিভিন্ন অংশে খাদ্য পরিবহন অব্যাহত থাকে।

১০. ছত্রাকের আক্রমণ রোধ : প্রস্বেদনের ফলে কোনো কোনো পাতার উপরতলে পানিগ্রাহী লবণ পরিত্যক্ত হয়।এ লবণ বায়ুমণ্ডল থেকে পানি গ্রহণ করে পাতাকে আর্দ্র রাখে ও ছত্রাকের আক্রমণ প্রতিরোধ করে।

১১. কোষ বিভাজন : প্রস্বেদন পরোক্ষভাবে কোষের স্ফীতি বজায় রেখে কোষ বিভাজনে সাহায্য করে।

১২. অভিস্রবণ : প্রস্বেদনের ফলে কোষরসের ঘনত্ব বাড়ে, ফলে অভিস্রবণের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

১৩. শক্তি নির্গমন : পাতায় পতিত সৌরশক্তির একাংশ মাত্র (১%) বিভিন্ন কাজে ব্যায়িত হয় বাকি তাপশক্তি প্রস্বেদনের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। তা না হলে গাছ তাপিত হয়ে মারা যেত। 

১৪. পুষ্প প্রস্ফুটন ও ফল সৃষ্টি : প্রস্বেদনের ফলে কোষে পরম রসস্ফীতি রক্ষা পায় বলে পুষ্প প্রস্ফুটন ও ফল সৃষ্টি সম্ভব হয়।

১৫. প্রস্বেদনের ফলে পানি বাষ্পাকারে বের হয়ে গিয়ে আকাশে ঘনীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হয় এবং বৃষ্টিপাত ঘটায় । যে এলাকায় গাছপালা বেশি থাকে সে এলাকায় বৃষ্টিপাত বেশি হয়।

প্রস্বেদনের অপকারিতাঃ

১. প্রস্বেদনের মাধ্যমে দেহ থেকে বাষ্পাকারে পানি বের করে দিতে উদ্ভিদের শক্তির অপচয় হয়। 

২. প্রস্বেদনের কারণে উদ্ভিদের শোষিত পানির অপচয় হয়। শোষিত পানির পরিমাণ অপেক্ষা প্রস্বেদন বেশি হলে গাছ শুকিয়ে মারা যায় (উইলটিং)।

Content added By
খাদ্যের অভাবে
শ্বসনের হার কমে বলে
অীভস্রবণের হার কমে বলে
প্রস্বেদনের হার কমে বলে
রেচনের হার কমে বলে
Promotion